শাহ আব্দুল হান্নানের ‘আমার কাল, আমার চিন্তা’

নাঈমুল হামিদ

২০০৮-০৯ সালের কোনো একদিন। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বড় ভাই আমাকে জানালেন, সাবেক সচিব শাহ আব্দুল হান্নান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে একটি স্পেশাল পাঠচক্র শুরু করতে যাচ্ছেন। সেখানে যোগ দিলে আমি নতুন কিছু শিখতে পারবো, কুরআন-সুন্নাহ, আইন, সংস্কৃতি, সামাজিক বিজ্ঞান ইত্যাদি সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।

এর কিছুদিন আগেই শাহ আব্দুল হান্নান সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক/নেতা হিসেবে তাকে সবাই চিনে। একুশে টেলিভিশনের একটি টকশোতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধ নাকি সিভিল ওয়ার তা নিশ্চিত হওয়ার কথা বলে সারা দেশে উনার তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র হিসেবে তিনি সেই টকশোতে উপস্থিত না থাকলেও তাকে সেভাবেই আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করা হচ্ছিল অথচ তিনি শান্তভাবে সেসব প্রশ্নের যৌক্তিক জবাব দিয়েছিলেন। ফলে পাঠচক্রে অংশগ্রহণের সুযোগ ছাড়তে রাজি ছিলাম না।

সেগুনবাগিচায় উনার তৎকালীন বাসায় পাঠচক্রে অংশগ্রহণ শুরু হলো। সব মিলিয়ে ১২-১৫ জন। সোফা-চেয়ারে জায়গা হয় না বলে অল্প কয়েকজন বাদে সকলকেই ফ্লোরে বিছানো চাদরের ওপর বসতে হতো। তিনি সকলের মাঝে একটি সোফায় বসে ক্লাস নিতেন। শুরুর ক্লাসেই কোনো একজন শিক্ষার্থী তাকে স্যার সম্বোধন করায় জানালেন, উনাকে সবাই ‘চাচা’ ডাকে, আমরাও যেন তাই ডাকি।

চাচার সেই পাঠচক্র মূলত ইসলাম বিষয়ে। উনার একটি ছয় মাসব্যাপী কোর্স ডিজাইন করা আছে, সপ্তাহে একটি করে ক্লাস। ছাত্রদের পড়াশোনার কথা বিবেচনা করে সেই কোর্সকে তিনি দুই মাসে শেষ করবেন। সব মিলিয়ে আট-দশটি ক্লাস। কুরআন, হাদিস, উসুলে ফিকাহ, রাজনীতি, ইতিহাস, সমাজবিদ্যা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে তার একেকটি ক্লাস। উনি ঘণ্টাখানেক লেকচার দেন, নোট করতে বলেন। তারপর প্রশ্নের উত্তর দেন আধাঘণ্টা। বলতে লজ্জা নেই, উনার সেই পাঠচক্র হতে আমি বিশেষ কোনো উপকার নিতে পারিনি। এর কারণ হলো- তিনি মূলত সংক্ষিপ্ত ধারণা দিতেন এবং প্রচুর বই এবং লেখক রেফার করে দিতেন। এদের সবাই-ই ইংরেজি ভাষায় লিখেন, তাদের বই তখন পর্যন্ত খুব কমই অনুবাদ হয়েছে। তা ছাড়া, এসব বিষয়ে পূর্ব থেকে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকায় আগ্রহ তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পাইনি। পরবর্তীতে অবশ্য উনার রেফার করা লেখকদের লেখার সাথে পরিচয় ঘটেছে, উনার সাথেও বিভিন্ন উপলক্ষে সাক্ষাৎ হয়েছে, তবে সেগুলো নিতান্তই ফরমাল এবং উনার সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি।

বহু বছর পর উনার মৃত্যুর দিন কয়েক বাদে উনার আত্মজীবনী ‘আমার কাল, আমার চিন্তা’ নামের বইয়ের পিডিএফ পড়তে গিয়ে সেই পাঠচক্রের অভিজ্ঞতা স্মরণ করলাম। তিনি যে অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন পেশার ও বয়সের লোকদের জন্য এ ধরনের কোর্স পরিচালনা করছেন তা তখন শুনলেও স্পষ্ট ধারণা ছিল না। আত্মজীবনী পাঠে সে ধারণা স্পষ্ট হলো। সেই সাথে আরও অজানা অনেক বিষয়, বিশেষ করে তার চিন্তা ও কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেল।

আত্মজীবনীতে চাচা নিজের জীবনকে মোটা দাগে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম ভাগে রয়েছে তার শিক্ষাজীবন। এই জীবনে তার অর্জন বলতে তেমন কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। এ কারণে খুব সংক্ষেপে তিনি শিক্ষাজীবন সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়েছেন। তারপর মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তৎকালীন ছাত্রসংঘের কর্মী হিসেবে সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। পড়াশোনার তুলনায় সংগঠনের কাজেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন তিনি। পড়াশোনা শেষে সিভিল সার্ভিসে পরীক্ষা দিয়ে মেধাতালিকায় সারা দেশের মধ্যে ৫২তম অবস্থান নিয়ে উত্তীর্ণ হন। একটি বিষয়ে পরীক্ষা বেশ খারাপ হওয়ায় মেধাতালিকার প্রথম দিকে থাকতে পারেননি তিনি। ১৯৬৩ সালে সিভিল সার্ভিসের চাকরি শুরু করার মাধ্যমে তার শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি ঘটে।

কর্মজীবনে তিনি ফাইন্যান্স সার্ভিসের ক্যাডার ছিলেন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি চট্টগ্রামে কাস্টমসে যোগদান করেন। স্বাধীনতা-উত্তরকালে তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে যোগদান করেন। বেশির ভাগ সময়েই তাকে এখানেই চাকরি করতে হয়।

চাচা তার কর্মজীবনের কয়েকটি কাজকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যেমন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে ব্যাংকিং রিফর্মের দায়িত্ব পালন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে থাকাকালীন ভ্যাট চালুকরণ, দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন, সচিব হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন ও পদত্যাগ ইত্যাদি।

তিনি তার কর্মজীবনকেও ইবাদতের অংশ হিসেবে নিয়েছিলেন। এ কারণে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন এবং প্রায় সকলের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছিলেন। বিশেষ করে, তিনি জামায়াতে ইসলামীর লোক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উনার সম্পর্কে সুধারণা পোষণ করতেন তার বর্ণনা তিনি আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য, নানা কারণে তিনি নিজেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। উনার ব্যক্তিগত কারণ কী ছিল তার বর্ণনা তিনি দিয়েছেন একটি অধ্যায়ে।

তার জীবনের শেষ ভাগটি হলো ইসলামী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মীর জীবন এবং এ জীবনকেই তিনি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদূদীর ‘ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি’ বই পাঠের মাধ্যমে তার নিজের জীবন ঘুরে গিয়েছিল। সমগ্র জীবনকেই তিনি দাঈর জীবন হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

শাহ আব্দুল হান্নানের দাওয়াতি কাজের লক্ষ্য ছিল তরুণ-তরুণীরা। আশির দশকে তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে ইসলামী আন্দোলনে নতুন চিন্তাভাবনা ধ্যান ধারণার সন্নিবেশ ঘটানো প্রয়োজন। এ ছাড়া, এদেশের নারীরা ইসলামের দাওয়াতি পরিসীমার বাহিরেই অবস্থান করছে, তাদেরকে লক্ষ্য করে কোনোরকম কাজ হচ্ছে না। তখন তিনি বুয়েট, মেডিক্যাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঠচক্র শুরু করেন যা পরবর্তীতে ‘উইটনেস’ নামের সংগঠনে রূপান্তরিত হয়। একই আদলে তিনি তরুণদের নিয়ে কাজ শুরু করেন যা পরে ‘পায়োনিয়ার’ নামের সংগঠনে রূপ নেয়। তার শুরুর দিকের সে সকল শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই দেশে বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উইটনেস-পায়োনিয়ার একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে উম্মাহর কল্যাণে ভূমিকা রাখবে- তার লক্ষ্য এমনটিই ছিল।

নারীদের অগ্রগতির জন্য শাহ আব্দুল হান্নান তার যৌবন থেকেই কাজ করেছেন। নারীদের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে প্রচলিত ব্যাখ্যার সবটুকু যথার্থ নয় বলে তিনি মনে করতেন। বিশেষ করে নারীদের স্বাধীনতা অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্বের অন্যান্য সমসাময়িক স্কলারদের চিন্তা ভাবনা গবেষণা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার ফলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এদেশে নারীদের নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। এ কারণে তার সকল কর্মকাণ্ডের মধ্যে নারীদের অধিকার সংক্রান্ত কাজকে তিনি অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছেন। নারী ও বাস্তবতা প্রসঙ্গে তার নিজের রচিত একটি গ্রন্থ রয়েছে। কাজটি সহজ ছিল না, তাকে নানা বিরোধিতার সম্মুুখীন হতে হয়েছিল। আবদুল হামিদ আবু শুক্কাহ রচিত তিন খণ্ডের বই ‘রাসূলের যুগে নারী স্বাধীনতা’ অনুবাদ ও প্রকাশে তাকে ইসলামপন্থীদেরই বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল বলে তিনি একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন।

নিজের জীবন যাপন এবং দাওয়াতি কার্যক্রমে তিনি সবসময় মধ্যপন্থা অনুসরণ করেছেন এবং মধ্যপন্থা অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে ধর্মীয় চরমপন্থা ও জিহাদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের জন্য তিনি সবসময় পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমান বিশ্বে ধর্মীয় চরমপন্থার বিস্তৃতির অনেক আগে থেকেই তিনি এ কাজ শুরু করেন। তিনি গণতন্ত্রপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে সামান্য কিছু পরিবর্তন করে এবং কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা স্পষ্টীকরণের মাধ্যমে আল্লাহর শাসন নিশ্চিত করা সম্ভব বলে তিনি সবসময় মনে করেছেন এবং সকলের কাছে তা তুলে ধরেছেন। দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্র পরিচালনা, নারী স্বাধীনতা, সামরিক বাহিনী, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক, মুসলিম বিশ্বের করণীয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি, কাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে তার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায় বইয়ের শেষ অধ্যায়ে যেখানে তিনি সরাসরি এ সকল বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, কুরআন-হাদিস, আইন ইত্যাদিসহ জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ইসলামপন্থী গবেষকদের কাজ সম্পর্কে তিনি খোঁজ খবর রাখতেন এবং এদেশের আলেমদের মধ্যে, গবেষকদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতেন। এদেশের বরেণ্য আলেমদের সাথে জড়িত থেকে অপেক্ষাকৃত আধুনিক তথ্যাদি সংযুক্ত করার প্রচেষ্টার কথা তিনি আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন।

হজ্জ ও বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে কিভাবে তিনি বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, ইসলাম ও অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ-দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তা ‘আমার কাল, আমার চিন্তা’ গ্রন্থের একটি অধ্যায়ে তুলে ধরেছেন। বই বিলি করা তার দাওয়াতি কাজের অন্যতম উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এ জন্য নিজের রচিত বই যেমন ব্যবহার করেছেন, অন্য লেখকদের বই, ফটোকপি ইত্যাদিও ব্যবহার করেছেন। রাসূলের যুগে নারী স্বাধীনতা বইয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশে বাঁধার সম্মুখীন হওয়ায় বইয়ের ট্রেসিং থেকে ফটোকপি করে বিলিয়েছিলেন।

আত্মজীবনীতে তার নিজের রচিত বইগুলো সম্পর্কে কোনো আলোচনা না থাকলেও সে বিষয়ে কিছু আলোকপাত করা প্রয়োজন। তার লিখিত বইয়ের মধ্যে উসুল আল ফিকাহ বইটি সর্বাধিক জনপ্রিয়। অর্থনীতি নিয়ে তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ইসলামী অর্থনীতি দর্শন ও কলাকৌশল’। এছাড়া রয়েছে- ল ইকনোমিকস অ্যান্ড হিস্ট্রি। আরেকটি বই হলো- সোশ্যাল ল অব ইসলাম। তিনি সংক্ষিপ্ত আকারে মূল্যবান তথ্য-রেফারেন্স সমৃদ্ধ লেখা লিখতেন। এসব লেখা তিনি ইমেইলের মাধ্যমে, ফটোকপি করে বিতরণ করতেন। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় এসব লেখা প্রকাশিত হতো। এ ধরনের লেখাগুলো বিভিন্ন বইয়ে সঙ্কলিত হয়েছে। নারী ও বাস্তÍবতা, দেশ সমাজ ও রাজনীতি, বিশ্ব চিন্তা ইত্যাদি এরকম কিছু গ্রন্থ।

শাহ আব্দুল হান্নান নিজে সংগঠন গড়েছেন, সংগঠনকে টেকসই করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তাকে জামায়াতে ইসলামীর লোক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকলেও আত্মজীবনীতে তিনি এ বিষয়ে কিছুই লিখেননি। বোধ করি তিনি নিজেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর তুলনায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। এমনও হতে পারে, রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না হওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনে মেনে চলতেন বলে এ বিষয়ে তার কোনো আলোচনা নেই।

কামিয়াব প্রকাশন হতে ২০০৮ সালে ‘আমার কাল, আমার চিন্তা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তার বক্তব্যের অনুলিখন করেছেন কবি ওমর বিশ্বাস। শাহ আব্দুল হান্নানের কথা শোনার সুযোগ যাদের হয়েছে তারা বইটি পাঠ করে স্বস্তি বোধ করবেন, মনে হবে তিনিই কথা বলছেন। বাকিদের কাছেও সহজ বাক্যে প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত বইটি ভালো লাগবে।

একজন দ্বীনের দাঈর জীবন কেমন হওয়া উচিত তা জানার জন্য, উপলব্ধি করার জন্য শাহ আব্দুল হান্নানের আত্মজীবনী ‘আমার কাল, আমার চিন্তা’ পাঠ করা উচিত। তিনি একদিকে যেমন পেশাগত কর্মকাণ্ডে নিজের যোগ্যতার সর্বোচ্চ দানের মাধ্যমে অবদান রেখেছেন, তেমনি আখিরাতের জন্য দাওয়াতি কার্যক্রমকে নিজের জীবনের অংশ বানিয়ে নিয়েছেন। আমৃত্যুই তিনি তার এ দাওয়াতি কাজ চালিয়ে গেছেন যার কিছু কিছু তার মৃত্যুর পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিন ইসলামের এই দাঈর জীবন থেকে আমাদের শেখার তাওফিক দিন এবং তাকে ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকামে স্থান দিন। আমিন।

লেখক : সহকারী সম্পাদক, ইউথওয়েভ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *